মুফাক্কিরে ইসলাম সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. প্রতিষ্ঠিত দাওয়াতি ও মানবিক সংগঠন
মানবতার কল্যাণ ও সেবায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
'পয়ামে ইনসানিয়াত বাংলাদেশ' বিংশ শতাব্দীর প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও দার্শনিক আল্লামা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (রহ.) প্রতিষ্ঠিত একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, সামাজিক, মানবিক, আধ্যাত্মিক ও দাওয়াতি সংগঠন। এই সংগঠন নির্ভেজাল মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে ব্যক্তি ও সমাজ গড়ার আন্দোলন। এ সম্পর্কে সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. বলেন, পাশ্চাত্যের ভোগবাদী জীবনদর্শন মানুষের আত্মার উন্নয়ন করতে না পারায় বিশ্ব আজ ভয়াবহ নৈতিক ও মানবিক সংকটে নিমজ্জিত। যুদ্ধ, হানাহানি, হিংসা, বিদ্বেষ, স্বার্থপরতা ও বিভাজনে জর্জরিত এ পৃথিবী। এ পরিস্থিতি থেকে মানবতার মুক্তির একমাত্র পথ হলো তাদের সামনে সেই আধ্যাত্মিক পয়গাম তুলে ধরা, যা নবী-রাসূলগণ প্রচার করেছেন। সেই পয়গামকে একটি সর্বজনীন সামাজিক আন্দোলনের রূপ দিতে মুফাক্কিরে ইসলাম সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. ১৯৫১ সালে অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং ১৯৭৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের ইলাহাবাদে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে ‘পয়ামে ইনসানিয়াত’ (মানবতার ডাক) নামক সংগঠনটির গোড়াপত্তন করেন
আমাদের কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো একটি নৈতিক, আদর্শিক ও কল্যাণমুখী সমাজ গঠন। এই লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন দাওয়াহ, শিক্ষা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করি।
দাওয়াহ মানে হলো ইসলামের বার্তা মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়া। এটি শান্তি, সহানুভূতি ও আলোর পথে আহ্বানের এক মহান দায়িত্ব।
ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ সঠিক দ্বীন ও নৈতিকতা সম্পর্কে জানতে পারে। এটি একটি জ্ঞানের আলো ছড়ানো কর্মযজ্ঞ যা আত্মশুদ্ধির পথ তৈরি করে।
ইসলাহ সমাজের অনৈতিকতা দূর করে সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ গঠনে সহায়তা করে। এটি আত্মিক ও সামাজিক পুনর্গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
খিদমাহ মানবতার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম। অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ইসলামের মমত্ববোধকে বাস্তবায়ন করে।
আমাদের দেশে মাদরাসাপড়ুয়ার সংখ্যা ২% আর স্কুলপড়ুয়ার সংখ্যা ৯৮%। এই ৯৮% স্কুলপড়ুয়ার নিকট দ্বীনের মৌলিক শিক্ষা পৌঁছে দেয়া এবং তাদের ঈমান-আকীদা হেফাজতের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের জন্য ‘আফটার স্কুল লার্নিং কুরআন’ নামে পৃথক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা করা হয়।
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মুসলিম ভাইবোনদের জন্য বিশুদ্ধ কুরআন পড়া ও আয়াতের অর্থ বুঝার পাশাপাশি ঈমান, ইবাদত, মুআমালাত, মুআশারাত ও আখলাকসহ একজন মুসলমানের যতটুকু দ্বীনি জ্ঞান থাকা ফরজ তা শিক্ষাদানের জন্য ‘ফরজে আইন শিক্ষা’ কার্যক্রম পরিচলানা করা হয় ।
শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর নিকট বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে ইসলামের দাওয়াত তুলে ধরার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, গোলটেবিল, ডায়ালগ, মতবিনিময়, আলোচনা সভা ও কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
আধুনিক চিন্তা-দর্শনের প্রভাবে নাস্তিকতা ও ইরতিদাদী প্রবণতায় আক্রান্ত মুসলমানদের মধ্যে দীনি দাওয়াত পরিচালনায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ও জ্ঞানগত দক্ষতার সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে নবীন আলেম, ইমাম, খতীব, দাঈ ও বক্তাদের জন্য দাওয়াহ প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার ব্যবস্থা করা হয়।
সমাজ থেকে শিরক, বিদআত, সুদ, ঘুষ, দূর্নীতি, যৌতুক, মাদকতা, অশ্লীলতা ও সামাজিক কুসংস্কার নির্মূলে জনসচেতনতা সৃষ্টি, বই-পুস্তক বিতরণ এবং দাওয়াতী ও ইসলাহী প্রোগ্রামসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে খৃস্টান মিশনারী, কাদিয়ানী, বাহাই, হিযবুত তাওহীদ সহ বিভিন্ন সম্প্রদায় সহজ সরল মুসলমানদের ঈমান হরণ করছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অসংখ্য মানুষ খৃস্টান ও কাদিয়ানী হয়ে যাচ্ছে। এসব মুসলমানের ঈমান-আকীদা হেফাজত এবং অমুসলিমদের নিকট ইসলামের দাওয়াত তুলে ধরার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দাওয়াতী কাফেলা প্রেরণ করা হয়।
সুস্থ সংস্কৃতির লালন ও বিকাশ এবং মানবকল্যাণের পরিপন্থী অপসংস্কৃতির অপসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে ও উপলক্ষ্যে সাংস্কৃকিত অনুষ্ঠান, সীরাত ও বিষয়ভিত্তিক ইসলামী জ্ঞান ও কুইজ প্রতিযোগিতাসহ নানামুখী সাংস্কৃতিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
ইসলামের সৌন্দর্য, আকীদা-বিশ্বাস, তাওহীদ-রিসালাত-আখিরাত, ইসলামের মানবিকতা, মানবাধিকার ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব, বাতিল ধর্মের অসারতা ইত্যাদি বিষয়ক লিটারেচার, বই-পুস্তক, পত্র-পত্রিকা ও প্রচারপত্র প্রকাশ ও বিতরণ করা হয়।
মানুষের ঈমান, আখলাক ও চিন্তার সংশোধন এবং তাদের মধ্যে দাওয়াতি চেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে দাওয়াতি ও ইসলাহি মজলিসের আয়োজন করা হয়।
খেদমতে খালক্ব বা আর্তমানবতার সেবা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। খৃস্টান মিশনারীরা আজ এ হাতিয়ার ব্যবহার করে গরীব মুসলমানদের ঈমান হরণ করছে। তাই পয়ামে ইনসানিয়াত বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য স্কুল ও চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা; ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল ক্যাম্প; দুস্থ মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা; শীতবস্ত্র, ত্রাণ ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ; নওমুসলিমদের পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
যারা বিভিন্নভাবে দ্বীন ও ইসলামের খেদমত করে যাচ্ছেন তাদের মাঝে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সম্পর্ক, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি, একে অপরের সাথে বসা ও বৈঠক এবং মতবিনিময় ও পরামর্শের পরিবেশ তৈরি করা
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালর ছাত্র-শিক্ষক ও বয়স্ক সাধারণ শিক্ষিতদের জন্য 'ইসলামিক হোম স্টাডি কোর্স’ নামে অনলাইনে দ্বীনি ইলম শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়
আমরা আমাদের সদস্যদের এবং সমাজের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রেখে কাজ করি। আমাদের কাজের মান সর্বোচ্চ এবং আমরা সবসময় আপনাদের আস্থার পক্ষে আছি।
আমরা সমাজের উন্নয়নে বিশ্বাসী। প্রতিটি কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা জনগণের জন্য কল্যাণকর কাজ করে যাচ্ছি, যা ভবিষ্যতে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
‘পয়ামে ইনসানিয়াত বাংলাদেশ’ তার যাবতীয় কল্যাণমূলক কাজের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে 'ইনসানিয়াত কমপ্লেক্স' নামে একটি দ্বীনি মারকায গড়ে তুলতে চায়। যেখান থেকে পয়ামে ইনসানিয়াত বাংলাদেশের দেশব্যাপী সকল দাওয়াহ, শিক্ষা, আত্মশুদ্ধি, সংস্কার ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এটি একটি অরাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন, যা সমাজের কল্যাণ ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রচারের লক্ষ্যে কাজ করে।
শিক্ষা, দাওয়াহ, সেবা, আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং আত্মশুদ্ধির কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
আমাদের অফিস বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সদস্য হতে পারেন।
আমাদের নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্ট বা বিকাশ/নগদ মাধ্যমে অনুদান পাঠানো যায়।
ইসলামিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণ, এবং সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা।